শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
(বই পর্যালোচনা : গাজা উপত্যকার গল্প ) পরাবাস্তব জীবনের মোহে : মুনীর আল মুসান্না সময়ের দশে দশ– মুনীর আল মুসান্না ধামইরহাটে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশকে সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা তেরখাদা উপজেলা বিএনপির মতবিনিময় ও সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত ধামইরহাটে ওয়ার্ল্ড ভিশনের আয়োজনে শিশুদের জন্মদিন উদযাপন বসুন্ধরায় নারীচক্রের ভয়ংকর ফাঁদ — ১১ বছর ধরে পুরুষদের ব্ল্যাকমেইল! ঐতিহ্যবাহী শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির রবিউল হোসেন সভাপতি নির্বাচিত হাজারো নেতাকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত যুবদল নেতা পিন্টু এক্সিডেন্ট চলবেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক চার বা ছয় লেন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দাওয়াতি পক্ষ গণসংযোগে লোহাগাড়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ
মুনীর আল মুসান্না’ সাহিত্য পাতা

 

অপরূপ ছবি

শরতের একগাদা শাদা শাদা মেঘ
সমতল জুড়ে আঁকা মায়েরই আবেগ।
কাশফুল মেলা যেন ফুল হয়ে হাসে,
চেয়ে আমি মুগ্ধ যে দেখি চারিপাশে।

লোভে দেয় জালিবক একপায়ে খিল
ফাঁকি দিয়ে ছোঁ মেরে চলে গাঙ চিল।
আকাশের রঙ যেন মেঘ মাখামাখি
ফুরফুরে দিনটার ছবি করে রাখি।

এই চরে ঐ চরে কত প্রাণ জাগে,
বলো এ ছবি তুমি দেখেছো কী আগে?
এখানে খুঁজে খুঁজে যেখানেই যাও
সমতলে পাহাড়ের ছবিটি মিলাও

সবখানে সেই একই মানুষের বাস
হাসিখুশি থাকি এই দেশে বারমাস।
পাহাড় নদীর পাশে শত শত গ্রাম
হাজার বছর ধরে পৃথিবীতে নাম।

যশোর শহরতলী

পাহাড় দেখেই বলবে যখন টিলা
মেঘ ছাড়িয়ে দূরের নভো নীলা
একটু একটু বাতাসে ভর করে
খুঁঁজতে গিয়ে দূর দেশান্তরে!

ফেরার পথে সেই ঠিকানা এসে
ঘোমটা দেখি মা মা ভালবেসে,
বুঝতে পেলাম আমার নামে যে
নাড়ু জমায় তার বুকে কী বাজে?

খুব গোপনে তাকে চমকে দিতে
দেখতে এলাম রোদের আর্শীতে
ভৈরবী দিন যশোর শহরতলী
পথ ভুলোনা কবির নামে গলি।

ধরতে পারো আমিই ছবির লোক
এসেছি ফের মুছতে মায়ের শোক।
একটু হাসো তুমি ও মায়ের সাথে
বিশ্বাস রাখো বাংলাদেশের পাতে।

রক্তের দামে কেনা মাটি

এ মাটির গন্ধ বড় সোদা সোদা লাগে,
সবুজ মাঠের মায়া প্রতি বুকে জাগে।
রূপকথা চুপকথা যায় মুখে মুখে,
কতশত ছবি সেটে আছে বুকে বুকে!

এইখানে এই মাঠ সবুজের পত্র পাঠ,
সারা বাংলার পথে জমা পাওনা বিরাট।
পাহাড়ের বুক চিরে কত শত নাম,
তেরশো নদীর ঢেউ বহে অবিরাম।

দ্রোহ জ্বালা নজরুল, ছড়া ফররুখে
দেশ নিয়ে ভালোবাসা গাঁথা আছে বুকে।
এতো তাজা রক্তের দামে কেনা মাটি
দালাল তোমার বুকে পা তুলে হাটি।

আবারও শকুনের চোখ যদি পড়ে
মিছিল নামবে শত শ্লোগানের ঝড়ে
বুক পেতে মুষ্টিতে ঐক্যের সুর
দেশ নিয়ে ভালবাসা বুকে ভরপুর।

 

কাকতাড়ুয়া

দেবদারু কাকতাড়ুয়া তোরা মাসতুতো ভাই?
সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে কী পাস খুঁজে ছুতোটাই?
রোজ দেখি দাঁড়িয়ে
পাতা হাত বাড়িয়ে
ভয়ে ভয়ে কাঁপে বুক, দিস কেনো গুতো ভাই?

সাঝবেলা ঘুম নেমে, এলোমেলো হলে গাঁ
ভয়ে ভয়ে তোর বুঝি ঘুম মোটেই আসে না?
তোর ও কী মাস্টার
হাতে নিয়ে ডাস্টার
নামতার পড়া ভুল হলে রোজ কান মলে না?

ইংরেজি হলে ভুল তোরে দেয় কে গুতো ভাই?
ভয়ে যদি বুক কাঁপে হাত দুটো মুঠো তাই?
বাতাস পেয়ে ফরফর
বুক ভেঙে জরজর
রোজ বুক চিতিয়ে চলবে কতো এ লড়াই?

মেঘ তাই ভয় পেয়ে বৃষ্টিতে ঝরে

খামোখা প্রশ্নে খোকা যতো দেবে টান
দাদুর ততো গল্প জমে মুগ্ধ জবান
এমনি মজার সে যে, এতোটা দারুণ
গল্পে সে কী টান মারে নিয়ে পানে চুন!
যদি বলি তাঁরারা কী আকাশের চোখ?
দাদু বলে, আগে শোনো গল্পটা হোক।
একদিন আকাশেতে বাঁধা হলো মেঘ
বৃষ্টির ঝাঁপি খুলে দেখো কী আবেগ!
বকলেই কেঁদে কেঁদে ঝরাবে সে জল
কে তারে এতো বকে করে কোলাহল?
যখনি সে বিজলিটা দাঁত হি হি করে!
মেঘ দেখো ভয়ে ভয়ে বৃষ্টিতে ঝরে!

দাদুর এই কথাতে খোকা হেসে মরে
মেঘ ভয়ে ভয়ে শেষে বৃষ্টিতে ঝরে?
তুমি ও রাতভর ভয়ে জড়ো হয়ে
ভূত ভেবে আঁধারে মাকে ধরো ভয়ে।
দূর দাদু তুমি শুধু এই বলে বলে,
ক্লাসে আছে প্রেস্টিজ? সবি গেছে চলে!
ক্লাসে চলে খোঁচা ঢের, ভীতু আমি খুব?
ব্যাপারটা দাড়ালো শেষে আমি বেকুব?
আর যদি ওদের ভয় পাওয়া দেখো?
হেসোনা, শোনো দাদু, এই কথা লেখো।
বলোতো সে মেঘগুলো কালো কেনো হয়?
হি হি করে হাসে দাদু, খুব বেশি ভয়?

লাল, সাদা, নীলে মিশে সাত রঙে মাখে
সূর্যের সাথে ও কী দোস্তিটা রাখে?
না দাদু, সূর্যের সাথে এতো আড়ি,
খুঁজে কভু পায়নাতো তাই নিজ বাড়ি।
ভয় পেয়ে শেষমেশ ঝরে পড়ে তলে
এতো সব সাধারণে বৃষ্টিটা বলে।
এই দেখা সাধারণে মেঘমায়া বলে
বলো দাদু রঙধনু? কী সে তাহলে?
চললাম তারি সাথে পথ হেটে হেটে
গল্পের ক্ষুধা যেনো একটু না মেটে।
চাঁদ তারার আকাশে স্বপ্নটা বুনি
পদ্যের মৌমাছিরা চলে গুনগুনি।

দাদুর গল্প

শিশির যখন আকাশ ভাঙে বৃষ্টি ভেবে ভুলে
ভাবতে বসে গল্প শুনার সুযোগ রাখি তুলে।
দাদু বলেন, বাবুরে এই হচ্ছে টা কী শুনি?
আয়না দাদু বসে বসেই জলের গিট বুনি!

মাকড়সার জাল করে ঢং ফোটায় ফোটায় জল
দাদুর গল্পে রাত্রি বাড়ে শিশির অবিরল।
গল্পে যখন যুদ্ধ জয়ের তরবারি ঝনঝন
গা ছমছম করে আমার অন্য রকম মন।

বলবো কতো বইয়ের কথা লেখা ইতিহাসে
দিগ্বিজয়ের খবর নিয়ে কোন খিলজি আসে?
কোন কাশিমে আসবে যে জাগিয়ে দিতে ফের
সবখানে রব তুই হবি সেই নতুন যুগের শের।

যায় উড়ে যায় তেপান্তরে ঘুরে মেঘের বাড়ি
রূপকথা শুনতে মোটে যায় না করা আড়ি।
দিব‍্যি বসে গল্প শুনি মুগ্ধ আমি এতো!
দাদু বলে, ঘুমো এখন বলব আর কতো?

ধুম কুয়াশা

ধুম কুয়াশা নামার আগে যেই ছুঁয়েছি আঁচল,
মা বলল, আমার খোকন শুকনো কাপড় তোল
তাড়াতাড়ি রাখ সরিয়ে রান্না করার কাঠ,
এই এখনই নামবে আঁধার ঝাঁপসা দূরের মাঠ।

কোথায় রে তোর দুষ্টু বুবু? আনতো তারে ডেকে,
বেণীটা তার এলোমেলো দেখছি সকাল থেকে।
জারুল ডালে ডাকছে ঘুঘু, ছয় ডাহুকের দল,
ধুম কুয়াশা নামার আগে ঘরকে যাবি চল।

পুকুর পাড়ে বাঁধানো ঘাট, দূরের পথচারী
উড়িয়ে ধুলো কুয়াশার যে দারুণ বাড়াবাড়ি।
এর মাঝে তোর বাবার ফেরা জামায় ভেজা ঘাম
মসজিদে তোর দাদুর আযান চৌদিকে যায় নাম।

চশমাটা দে দাদীর হাতে, জায়নামাজের পাটি
তসবিটা রাখ খোঁজার আগে থামিয়ে হাটাহাটি।
সাঝের বেলা এই কুয়াশার নামুক যত ধুম,
মাঠের ঘাসে উঠানে রাখ জমিয়ে রাতের ঘুম।

মেঘ ছাড়িয়ে

ঠায় দাঁড়িয়ে বকের মতন
এক পায়ে ঠায় দাঁড়িয়ে
খুঁজতে গিয়ে ঝড়ের পতন
ঝাঁক বেঁধে মেঘ ছাড়িয়ে

সন্ধ্যাকাশে যেই বলাকা
নীড়ের টানে মেললো পাখা
দলবেঁধে সাঝ পতাকা
ফিরবে কোথায় ছবির ঝাকা?

ভাবতে গিয়ে খেই হারিয়ে
যদি একলা আমি থাকি,
আমার এ মন পাখি দিয়ে
ঝড়ো মেঘর ছবি আঁকি।

মেঘ বলেনা বাড়ি এসো
আমার সাথে খেলবে এসো
ঘুরবো দূরে অন্য দেশ ও
দোহাই তোমার পরে হেসো!

জমিয়ে আড়ি ভীষণ আড়ি
ফিরে যাও আপন বাড়ি
শহর থেকে অল্প দূরে
চিত্রা নদী দেবে পাড়ি?

কাসুন্দি ভুল

তোমার শহর ছেড়ে যাবার ইচ্ছেগুলো বড়
টালবাহানা দেখিয়ে রোজই হচ্ছে জড়সড়।
বুঝতে পারি এখানে রোদ, তোমায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে
মেঘের ওপর ভর করে জল, পড়ছে যেন নুয়ে।
ভিজিয়ে দেবার এই বাসনায়, একলা রাজি নই
তুমি ও এসো, না হয় আমি, বাঁধাবো হইচই।
অনেকটা দিন, অনেক বিকেল, ডায়েরিতে জমা
অভিমানের পাহাড় দিলাম তোমায় প্রিয়তমা।

কাসুন্দি ভুল, বরই আচার, তেঁতুল কী বাদ যাবে
জলপাই দিন ফুরিয়ে গেলে তখন সময় চাবে?
বড় কত রসুন দেখি, চুইঝালে দোর সাটা
আচার আচার! মশলাপাড়া শব্দে মাতে গাঁ টা।
চৈত্র গেল, বোশেখী দিন রৌদ্র ছায়ার ঘুমে
আচার, আচার, ব্যাপার কবে, হবে এ মৌসুমে?
বৌ শস্য কোট, পাগল করা চোখ গেল ঐ পাখি
আচার আচার অভিমানে করছে মাখামাখি।
হুমকি দিলাম তোমার শহর আটকাতে পারবেনা
বুঝতে যখন পারবে বেড়ে যাবে অনেক দেনা।

সুগন্ধি বেথুল

হয়তো দেখেছি পাখির আকাল,গাছের আকাল বলে
হয়তো কান্না নিভিয়ে দিয়েছে বুকের আগুন জ্বলে।
হয়তো দেখেছি সুগন্ধি বেথুল হয়ে যায় বিষময়
হয়তো এখানে নিয়তি ছুয়েছে লাল নীল পরাভয়।
তবুও মানুষ তবুও পুরুষ ভয়ডর তুলে ফাঁদে
রমনীকে ছুঁয়ে শতাব্দীর যত বেদনা ব্যথায় কাঁদে।
এই টানাটানা রাত্রি পেরিয়ে শুকিয়ে জলের ক্ষত
ফের সংগ্রামে নতুনের মোহ জেগে ওঠে উন্নত।

তুমি ও এখানে ফাঁদ পাতা পথে হতে পারো সংগ্রামী
পদেপদে বাঁধা আস্থা ঘাতক কেড়ে নেবে সুখ দামী।
এই সর্পিল ত্রস্ত জনপদে ঘাতকের রূপ ভারি,
তীক্ষ্ণ চাহনির সদা সতর্ক, তবু কী বাঁচাতে পারি?
উপদ্রুত এই উপত্যকা কত রক্ত চুষেছে ঘাস
বেমালুম ভুলে করে মজলুম ভীড় ঠেলে বসবাস।
চটিতে দাগের এতো ছায়াছবি মুছে যাবে একদিনে?
যদি তদন্তে আবছা আলো ফিরে পায় শেষ ঋণে!
হয়তো আমার এই উপত্যকা মিছিলেই পাবে প্রাণ
হয়তো তুমি ও খুঁজে পাবে সেই সুগন্ধি বেথুল ঘ্রাণ।

সাহসের পোকারা

এই ঘোর কেটে ভোর আসবেতো শীঘ্রই,
ভীরুদের রাত হয় অতি বড় দীর্ঘই!
এই নিয়ে কত কথা যুগে যুগে রটনা,
সব কাজে বাঁধা হয় আজগুবী ঘটনা।

তিল বেড়ে তাল হবে, তাল ছেটে বেল,
শেষমেশ হবে কেউ আস্তো আতেল!
এরা এতো বেশি এতো বেশি বুঝবে!
ভীরুদের দল ভারি হতে যুজবে।

মিছিলের সামনে সাহসী মুখ যতো
মুক্তির স্বপ্নে মনে মনে দেয় ব্রত।
এই ব্রত মুক্তির বলবে কে জেদ করে?
মুক্তির সূর্য উঠে যাবে ভেদ করে।

হিংসায় জ্বলে শেষ একদল বোকারা
একসাথে ভোর দেখি সাহসী পোকারা।
কীট যতো এভাবে হয়ে যাবে ধ্বংস
ইতিহাসে এইভাবে হতে হয় অংশ।

ঘুড়ি

পাখির মতো উড়তে গিয়ে পাখিই হলাম বনে,
বেরিয়ে এসে ডাক দিলো কে হঠাৎ সঙ্গোপনে?
বাইরে দেখি ঘুড়ির সাথে ঘুরছে ছেলের দল,
নানান রঙের ঘুড়ি দেখেতো বাড়ায় কৌতুহল।
লাল নীল এক জটলা বাঁধায় বাতাসে থরথর
কোথায় যাবে ঘুড়ি ভাই? কোথায় তোমার ঘর?
সুতোয় বাঁধা এ জীবন আমার, মেঘের মধ্যে উড়ি
একটুখানি বাতাস পেলে লাগে সুড়সুড়ি!

তুমি ও যদি সুড়সুড়ি দাও? তাই যে থাকি দূরে
রাগ করে বকলে নাটাইসুদ্ধ যাবো উড়ে।
ভুল করেছো, আমায় তুমি পাখির মতো ভেবে,
একটু নাটাই ছেড়েই দেখো, কোথায় আসি নেবে?
আচ্ছা আমি মেঘ হলে, তোমার ক্ষতি টা কী?
বৃষ্টি জলে ভিজলে সেতো দারুণ মাখামাখি!
বাতাসে সুর রিনঝিনিয়ে, মাঠের তেপান্তর,
নাটাই ছাড়া পেলে আমি খুঁঁজবো মায়ের ঘর।
মাকে পেলে জড়িয়ে যদি ধরতে পারি এ বুকে,
ভাবতে পারো কেমন মধুর কাটবে জীবন সুখে?

এখনো অতটা

এখনো অতটা আঁধার নামেনি, এখনো অতটা ঘোর
প্রতিবাদে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে খুব প্রয়োজন তোর।
বাদামি চোখের লোলুপ দৃষ্টি বিদ্ধ হবার আগে,
মিছিলের দেশ জাগাতে বিরাট তুই থাক পুরোভাগে।
অনিয়ম যতই নিয়ম দেখাক, বারুদের বিষ ঘেঁষে
প্রতিবাদে তুই একাই দাঁড়াবি এই শতকের দেশে।
হয়তো বুঝিনি, অবাধ্য রাজা শিকলে করেছে বন্দী,
উন্নয়ন ঘোর খোয়াবের ভার দারুণ দুরভিসন্ধি।

তুই বল, এই স্বাধীনতা মানে নাটকের বুলি কিনা?
প্রতিবাদে বুক চিতিয়ে দাঁড়ালে রুখবে কে এ ঘৃণা?
সাহস আসে না! বলে যারা রোজ দেয় দূরে পিঠটান,
সয়ে সয়ে শেষ তারাও গাইবে প্রতিবাদের জয়গান।
এখনো প্রয়োজন তোর মিছিলের পুরোভাগে,
সাহসী পুরুষ তকমা লাগে না, যদি সে মিছিল জাগে।
সারি ধরে টান, জারি ধরে টান, দিতে চায় সকলে,
সাহসী পুরুষ শ্লোগানে মুখর সময়ের কথা বলে।
এখনো দেখো নিরাশা জমেনি শ্রমিকের প্রাণমনে,
পতাকা জাগাতে শ্লোগান নামুক সময়ের প্রয়োজনে।

চিত্রা নদীর পাড়ে

ঘুরবো এসো চিত্রা পাড়ে, এবেলা হই হারা
এসেই দেখো তুমি কিন্তু হবে পাগলপারা
এইখানে বাকে খাড়ির পাশে নদী জলমগ্ন জলে
বালিহাঁস, সারস মিলে সে কী ঢেউ মাতিয়ে চলে!

আকাশও দেখি এই সুযোগে, বাতাসে কী সুর
বাড়ির পাশে স্নানের নদী মিষ্টি মাখা রোদ্দুর?
পসরা নিয়ে হাটের সাজাই ভিড় করেছে ঘাটে
কারা আসে রোজ সদাই বিহীন এই চিত্রা হাটে?

লোক গমগম একটু পরেই হবে বিকিকিনি,
এই নিয়মেই ঢেউ বয়ে যায় যে চিরদিনই।
ঢেউ বয়ে আনে হিজল, টানে কদম ফুলের ঘ্রাণ
দস্যি সে দিন পার করেছি, তাতে কাঁদে মনপ্রাণ।

ফিরতে চেয়ে আর পাবো কী? খেলার সাথীকে
চুপিচুপি আজও আমি খুঁজি দিকে দিকে।
খোঁজ বলোনা সেই বালুতট, আবার হলে ভীড়
কেমন হবে? কেমন হবে? লাগছে যে অস্থির!

বর্ষা এলে রিনিঝিনি মেঘ ভেলায় ভেসে
ভিজবো সবাই এই বাদলে খুব হল্লা করে হেসে।
হাসির চোটে দম ফুরাবে কুড়িয়ে শাপলা ফুল
মায়ের বকা এমনই করে রোজ হয়ে যায় ভুল।

বাংলাদেশ

লাল নীল জীবনের কত কথা শুনি
এই নিয়ে শৈশবে স্বপ্ন যা বুনি,
মানা মানা কত যে নিষেধের ডেরা
চায় মন ভাঙতে কানাগলি ঘেরা।
নিজের জন্য নয় শুধু বেঁচে থাকা
দেশের জন্য চাই স্বপ্নটা আঁকা।
এইখানে পাহাড়ের ওপাশে নদী,
বয়ে যায় একটানা স্রোত নিরবধি।
ভাটিয়ালি গায় মাঝি, চাষী বাহে হাল
এই নদী আমাদের সাথী চিরকাল।
কামার, কুমার, তাঁতী মিলে বসবাস
সবখানে হয়ে আছে সম্প্রীতি চাষ।
বহুদূর মেঠোপথ ছায়া ঘেরা গাঁও
আমাদের এই দেশ ছবিতে মিলাও
বুক জুড়ে ভালবাসা সংগ্রামী মন
বাংলাদেশটাতো মায়েরই মতন।
গর্বে মাথা উঁচু করি সবখানে
বাংলাদেশী এই পরিচয় টানে।

মায়ের মুখে চাঁদের আলো

বলছি তোমায় ভালো খোকা
কিন্তু কেন দাঁতে পোকা?
কিন্তু কেন বেজার মুখে
পড়তে বসো দুখে দুখে?
ভালো পথে একটু ঘুরে
আর থেকোনা বহুত দূরে।
সকাল ভালো, বিকাল ভালো
আরো ভালো চাঁদের আলো।
তোমাদের ঐ বাড়ির পাশে
দেখতে ভালো দূর্বাঘাসে।
হাটতে ভালো, বসতে ভালো
নদীর ধারে ঘুরতে ভালো।
পাখির ওড়া দেখতে ভালো
সাতার কাটার ব‍্যায়াম ভালো।
পড়ার সময় পড়া ভালো
খেলার সময় খেলা ভালো।
পরিপাটি থাকা ও ভালো
স্বপ্ন কিছু আঁকা ও ভালো।
কিন্তু সবার চাইতে ভালো
মায়ের মুখে চাঁদের আলো।

কিসের বড়াই

তোমার ঠিক কিসের বড়াই?
চলছে এমন খন্ড লড়াই?
চলছে এবং চলবে আরও?
কারণ কী ঠিক বলতে পারো?

হঠাৎ এমন তিরিক্ষি মন
ভাবতে পারো এর কী ওজন?
বাড়ছে ক্ষতির এই যে দেনা
একটুও কেনো ভাবলেনা?

কাব্যে যখন দরপতন

কাব‍্যে যখন দরপতন, লাগবে কিসে লগ্ন?
বৃথা কিছু ভগ্ন মানুষ মুক্তি পেতেই মগ্ন!
ডুবতে থাকা মুক্তি সে বীর মিছিল নিয়ে ফিরে
ভগ্ন হৃদয় আশায় শুধু বুকটা জাগায় ধীরে।

ফুলে ফেঁপেই হচ্ছে দানব পাহাড় সম ধনে,
বৃথা অন্য স্বপ্ন দেখে দেশের জনগণে!
উল্লাসে যে মিছিলের স্বপ্নতে বুক নাচায়,
মায়ের গুমি পুত্র খুঁজি স্বৈরাচারীর খাঁচায়।

খুঁজবো কত, খুঁজবো কত? বিদ্রোহী হয় মন
আয়না ভাঙ্গি স্বৈরাচারের শক্ত পাটাতন।
মন উচাটন বুকের ক্ষতে ডুকরে কাঁদে যতো
মিছিল নিয়ে আয়না ভাঙ্গি দম্ভ শত শত!

সঞ্চারিত রক্তে যখন বইছে শতেক ঘৃণা
বিপ্লবে মন আটকানো মন কথা শুনবে কিনা?
ছন্দ ভেঙে শ্লোগান উঠুক মুক্ত স্বদেশ চাই
বাংলাদেশে বাংলাদেশী মূল্য থাকা চাই।

বিভেদের মন

পাহাড়ের কাছে এসেই দেখোনা
পাহাড় কতটা বড়,
গরবে যত এসেছো দৌড়ে
ফিরে ততোটা হবে জড়!

এই উপত্যকা ভুলাবে তোমার
চিরচেনা সব সমতল,
উঁচু নিচু এই বিভেদ রেখা
যেন ভাঁজ করে যতো ছল!

রাত্রি যখন দিনের কাতারে
সাধে অচলের এ সন্ধ্যে,
সাদাকালো এ বিভেদের মন
পঁচে পঁচে যাবে গন্ধে!

এই শহরে

এই শহরে তোমার যখন দেখার মানুষ শূন্য
আমার গাঁয়ে দেখার বিষয় ভাবে লোকে পূণ্য।
ভাবছি যখন এসব কথা আসলে কী তা সত্যি?
ভুল মানুষই সবখানে ভাই মিথ্যা নয় একরত্তি।
দেখতে বালক, নালায়েকী তকমা নিয়ে ঘুরে
এখন ভেদায় জাল ছিড়ে যায় হৃদয় ভেঙেচুরে।
বলতে গেলে তোমারই ভুল, বিরাট বড় ক্ষতি
চুপ করেছো, এ সমাজের তাই এতো দুর্গতি!

চোখ বুজলেই হয় কী জগৎ অমাবস্যার ঘোর?
দেখি দেখি করে দেশের আর হবে না ভোর।
খাচ্ছে কুরে জগৎ জুড়ে আমার বেলায় এতো
এমন শুনে চুপ করে কী দেশের ভালো হতো?
দেশটা রসাতলে যাবার কারণ শতেক আছে
আগে বাড়ো সাহস নিয়ে থাকবে কতো পাছে?
কুন্ঠে সবাই? জাগো বাহে, শোর ওঠেনা আর
উপত্যকার চুপ করা দিন নামায় অন্ধকার।

ঘুম পাড়ানী গান

এই শহরে তোমার যখন দেখার মানুষ শূন্য
আমার গাঁয়ে দেখার বিষয় ভাবে লোকে পূণ্য।
ভাবছি যখন এসব কথা আসলে কী তা সত্যি?
ভুল মানুষই সবখানে ভাই মিথ্যা নয় একরত্তি।
দেখতে বালক, নালায়েকী তকমা নিয়ে ঘুরে
এখন ভেদায় জাল ছিড়ে যায় হৃদয় ভেঙেচুরে।
বলতে গেলে তোমারই ভুল, বিরাট বড় ক্ষতি
চুপ করেছো, এ সমাজের তাই এতো দুর্গতি!

চোখ বুজলেই হয় কী জগৎ অমাবস্যার ঘোর?
দেখি দেখি করে দেশের আর হবে না ভোর।
খাচ্ছে কুরে জগৎ জুড়ে আমার বেলায় এতো
এমন শুনে চুপ করে কী দেশের ভালো হতো?
দেশটা রসাতলে যাবার কারণ শতেক আছে
আগে বাড়ো সাহস নিয়ে থাকবে কতো পাছে?
কুন্ঠে সবাই? জাগো বাহে, শোর ওঠেনা আর
উপত্যকার চুপ করা দিন নামায় অন্ধকার।

ভেতর ভেতর লক্ষ মানুষ ক্ষুধার তোড়ে খুন

রাজ্য শিকেয় বিবেক বিকেয় ফল পেয়েছি এই
ডুবতে থাকা এই আমাদেরই বিবেক কিছু নেই!
ভুল করে চুল ছেড়ার রাজা আমরা সকলেই
দোষ হবে কেন? আমরা আগের মানুষ এখন নেই!
লিখতে গেলে কলম ভাঙে তাই ছেড়েছি লেখা
মানুষ হবার দায় ছেড়েছি, কার পড়েছে ঠেকা?
এখন আমি মুক্ত মানুষ,বন্দী করি পাখি
মুক্তি মুক্তি নাটক করে সিরিজ ছবি আঁকি।

সেই ছবি যায় পুরস্কারে রাজ্য তালিকায়
পেপার জুড়ে আমার ছবি, এখন কে আটকায়?
আটকে শুধু দেশের মানুষ, আটকে পেঁয়াজ নুন
ভেতর ভেতর লক্ষ মানুষ ক্ষুধার তোড়ে খুন।
আর খুনি ঐ ঘুমোয় অঘোর, দুবাই বেগম পাড়া
আমরা ভোটার, গরীব কোটার আজও ছন্নছাড়া!
ছন্নছাড়ার দোষ দেবে দাও, কেয়ার করে কে?
তুমি ও এসো মানুষ হবে মনের বিবেক থেকে।
বিবেক যদি না জাগে থাক, ঘুমিয়ে তুমি থাকো
উন্নয়নের নাটক করে সিরিজ ছবি আঁকো।

আয় ফিরে তুই

এই টেলিফোন আর এলে তুই শুনবিনা আলাপ
রাগ হবে না? বল দিকি তুই এতোই শোকের তাপ!
মা যে কতই ভাবে তোরে,ওরে শূন্য ঘরে ভাই?
তোর তো খবর নাই, কেন নাই হয়েছিস নাই?
পারলি এমন? বল দিকি তুই বাবার মত করে?
ও খোকা, তোর সময় কবে ফেরার সময় ঘরে?
রাত্রি এলে কৌটা ভরা নাড়ুর গন্ধ কি যে,
মায়ের চোখে জল এনে দেয় দেখতি যদি নিজে!
মাকে বুঝায় যে আপু সেও লুকিয়ে রাখে চোখ
কষ্টগুলো লুকিয়ে যেন, বড় আস্তে বাড়ায় শোক।
বই ছবি ফুলে সাজানো তাক, ঘরজুড়ে সুনসান
তেমন শব্দে কেউ বলে না, হোকনা একটা গান!
গান হবে কী? মন মরা সব, কাটে নাতো বেলা
ভাল্লাগে না সারা দুপুর নীরব অবহেলা।
আসবি কবে? বলনা খোকা, রাত বেড়ে যায় ঘোর
আরেক বছর? নারে না শোন, শুক্র বড় জোর।
আয় ফিরে তুই চমকে দিতে, হঠাৎ কোনো ক্ষণে
এমন অনেক কল্পনা ক্ষণ ভাবছি মনে মনে।

এই বুক জুড়ে দেশ

চুপচাপ ঝরে যে শিশিরেরা রাতে
জোস্নার মায়াজাল খুনসুটি তাতে
সবুজ ঘাসের দেশ বিছিয়ে চাদর
মায়ের মতই তার রয়েছে আদর।
গল্পেরা ডানা মেলে রাজ‍্য ঘুরে
হয়না শেষ কিছু যাই যত দূরে।
শিয়রে মার পাশে দাদী পান বাটে
গল্পের ঘুমে কত রাত্রি যে কাটে।
হাজার নদীর দেশ মাছে ভরা খাড়ি
মাছধরা নিয়ে মা করে রোজ আড়ি।
ছিপছিপে সাম্পান চলে জল ঘেটে
ষড়ঋতু পরপর যায় দিন কেটে।
পাহাড়ের দেশ বলো আছে সৈকত ও
পৃথিবীর মাঝে এর রূপ উন্নত।
মায়াভরা মানুষের মেধা দিয়ে ঠাঁসা
এই বুক জুড়ে দেশ, বড় ভালবাসা।

হলুদ পাখি

খুুঁজতে গিয়ে হলুদ পাখি
পাখির বাসা,
পেলাম পাখির ডাকাডাকি
ছোট্ট বাসা।

যতই বলি হলুদ পাখি
কোথায় গেলে?
আমায় যেন চেঁচিয়ে বলে
দুষ্টু ছেলে।

পাতার ফাঁকে লুকোচুরি
কতো গানে
খুঁজতে এসে বুঝছি এখন
কেন টানে!

অভিমান

সেই কখন রাগ করেছি
সকাল বেলা ভোর তখন!
কেমন চোখের জল ফেলেছি
খোঁজ নিলোনা হয় এমন?

আমার কী রাগ ভাঙাতে নেই?
নেই কী আমার দাম মোটে?
তিনটি গ্লাস ঝোলের বাটি
মা ভোলেনি শোক বটে!

ভাবছি বসে মা না এলেও
বুবুর কেন আসতে নেই?
এসব যখন ভাবছি একা
ঐ যে বাবা আসছে সেই!

কত কথা বলে রে

কতো কথা বলে যায়
যে বলার নয়,
ততো টুকু রয়ে যায়
যা চলার নয়।

তবু দাম বেড়ে যায়
যা বাড়ার নয়,
বড় নাম ছেড়ে যায়
যা ছাড়ার নয়!

কিছু কথা রয়ে যায়
চিরকাল ধরে,
লোকে কথা কয়ে যায়
টক ঝাল করে!

টকঝাল মিষ্টির স্বাদ
তেতো যদি হয়
এই দেশে বহু বেশে
জাগে বিস্ময়!

বৃষ্টি যখন এলো

ছমছম গাঁয়ে
ঝমঝম পায়ে
বৃষ্টি যখন এলো
ঝুমুর বৃষ্টি এলো,

ধুমধাম করে
ঘুমনাম করে
ভিজতে কে যে গেলো?
লুকিয়ে কে যে গেলো?

খুঁজতে খুঁজতে তারে
পাড়ার দ্বারে দ্বারে
মায়ের বেলাটা শেষ,
শায়ান ও নিরুদ্দেশ!

একটু সময় পরে
ঘটাং ঘটাং করে
শব্দে আশে পাশে
কে আসে কে আসে?

কোন বাবুটা কে?
শায়ান সে যে
শব্দে আসে পাশে
হিহি করে হাসে!

রক্তের দামে কেনা মাটি

এ মাটির গন্ধ বড় সোদা সোদা লাগে,
সবুজ মাঠের মায়া প্রতি বুকে জাগে।
রূপকথা চুপকথা যায় মুখে মুখে,
কতশত ছবি সেটে আছে বুকে বুকে!

এইখানে এই মাঠ সবুজের পত্র পাঠ,
সারা বাংলার পথে জমা পাওনা বিরাট।
পাহাড়ের বুক চিরে কত শত নাম,
তেরশো নদীর ঢেউ বহে অবিরাম।

দ্রোহ জ্বালা নজরুল, ছড়া ফররুখে
দেশ নিয়ে ভালোবাসা গাঁথা আছে বুকে।
এতো তাজা রক্তের দামে কেনা মাটি
দালাল তোমার বুকে পা তুলে হাটি।

আবারও শকুনের চোখ যদি পড়ে
মিছিল নামবে শত শ্লোগানের ঝড়ে
বুক পেতে মুষ্টিতে ঐক্যের সুর
দেশ নিয়ে ভালবাসা বুকে ভরপুর।

একশো মিটার তফাত যাও

জাগতে বলে দেদার ঘুমে
খুঁজলে পাবে ভর মৌসুমে
করতে বলে তাড়িয়ে মারে
কথার তোড়ে ঘামিয়ে ছাড়ে!
বলার আগেই বলবে সে যে
বলতে গেলে রাগবে তেজে!
এই এটা না ঐ ওটা ধর
ধরলে ওটা রাগবে যে থর
এই লোকের খোঁজ কে চাও?
একশো মিটার তফাৎ যাও!
[12/10, 9:30 PM] Munir Al Musanna.: বাবুরে বাবু
বাবুরে বাবু হচ্ছি হাবু
আমি নাকি প‍্যাচাইনা?
ভণ্ড যত ভীমরতিতে
দেখে শুনেও চ‍্যাচাইনা!

তোর এমন হয় নাকি
আমার মত দোষ ভুরি?
অন্ধ অভিনয় কী করিস
পড়লে চোখে জোচ্চুরি?
[12/10, 9:31 PM] Munir Al Musanna.: দাঁড়িয়ে শোনার মতো
দালানকোঠা ঘর পেরিয়ে
যেই ঢুকেছি গ্রামে,
থমকে গেল চাঁদের আলো
আমার ডানে বামে!
এই গ্রামে মূল ঠিকানা
পূর্বপুরুষ সাকিন জানা
বেরিয়ে এসে মুখ বাড়িয়ে
গাঁয়ের দাদি চাচী,
খুব প্রয়োজন সবার জানা
আমি কেমন আছি?

খুব সকালে ধীর কুয়াশায়
খেজুর রসে রসে,
আগুন পোহায় গোল বৃত্তে
একগাদা লোক বসে!
এই আমাদের প্রাচীন গ্রামে
শীতের আমেজ কাঁপায় চামে
ছেঁড়া কাথা লেপের তলে
গল্প জমে যতো,
নেই কিছু তার ভাব এতো
দাঁড়িয়ে শোনার মতো!
[12/10, 9:32 PM] Munir Al Musanna.: মায়ের মুখে চাঁদের আলো
বলছি তোমায় ভালো খোকা
কিন্তু কেন দাঁতে পোকা?
কিন্তু কেন বেজার মুখে
পড়তে বসো দুখে দুখে?
ভালো পথে একটু ঘুরে
আর থেকোনা বহুত দূরে।
সকাল ভালো, বিকাল ভালো
আরো ভালো চাঁদের আলো।
তোমাদের ঐ বাড়ির পাশে
দেখতে ভালো দূর্বাঘাসে।
হাটতে ভালো, বসতে ভালো
নদীর ধারে ঘুরতে ভালো।
পাখির ওড়া দেখতে ভালো
সাতার কাটার ব‍্যায়াম ভালো।
পড়ার সময় পড়া ভালো
খেলার সময় খেলা ভালো।
পরিপাটি থাকা ও ভালো
স্বপ্ন কিছু আঁকা ও ভালো।
কিন্তু সবার চাইতে ভালো
মায়ের মুখে চাঁদের আলো।
[12/10, 9:34 PM] Munir Al Musanna.: পরিণাম
সময় ভুলে
চলছি দুলে
কী হয়েছি যে!

ভাবখানাটা
পায় কে ব‍্যাটা?
একাই শ নিজে!

তোয়াক্কা কে
করবে কাকে?
কত নিচে মাটি?

আই কী হনু
শোনরে গনু
নেতার পা চাটি!
[12/10, 9:35 PM] Munir Al Musanna.: মাটি থেকেই স্বপ্ন গড়ি
বুকের মধ্যে যত্নে লালন করছি যতো আশা
মাটি থেকেই স্বপ্ন গড়ি যত্নে ভালোবাসা।
যত্ন আছে কষ্ট শোকে, যত্ন চোখের জলে,
সুখ ভাবি ঠিক বেঁচে থাকাটা এই একই সমতলে।

এই ভাবি মানুষ হবো কেউবা ভাবে বড়,
বুকের মধ্যে সব কষ্টটা পুষে যত্ন করে জড়!
যত্নগুলো কষ্ট বাড়ায় আর না নেব বুকে
বাংলাদেশে কাটুক সবার জীবনটা খুব সুখে?
[12/10, 9:36 PM] Munir Al Musanna.: উস্কে দিওনা
টগবগে এই রক্তে আগুন
চোখ রাঙিওনা
রাজপথে এ শ্লোগান গলায়
উস্কে দিওনা!

ফাঁদ পেতেছি পঁচা শামুক
কাঁটবে তাতে পা
মোড়ে মোড়ে গড়ে প্রতিরোধ
বদলা নেবো না?

বদলা নেবো ভাই হারানো
অশ্রুত এক শোক
বুক চিতিয়ে দাঁড়াবে এসে
বাংলাদেশের লোক।

নামবে মিছিল নামবে মিছিল
শোক জনতার ঢল
শ্লোগান মুখর লক্ষ হাতই
বাংলাদেশের বল।

কাটাতারে বিদ্ধ জীবন
প্রতিবাদেই রুখবে
এই জালিমের তখতে শাহী
ধুকবে শেষে ধুকবে।
[12/10, 9:42 PM] Munir Al Musanna.: বিরল পাখি
দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি থেকেই
অন্য রকম গল্প বলার ছলে!
হয়নি বলা পাহাড় দেখার ভীড়ে
স্বপ্ন ভেঙ্গে কি লাভ পলে পলে?

বিরল পাখি; ছোট্ট পাখির মত
এক পাতাতেই ছোট্ট ডানায় ঘর
তার পাশে ঠিক তোমার কাছে
বুঝিয়ে দিতে মনের কত দর?

দর না পেলে ও নেই যে ক্ষতি
পাখির মতই একটু ঘটা করে,
তুমি ও বুঝবে এই বোশেখেই
অন্যরকম কালবোশেখীর পরে!

তখন আমিই পাখি হবো যেনো
স্বপ্নগুলো ফিকেই যদি হয়,
গল্প শোনার মিথ্যে আয়োজনে
লুকিয়ে দেবো গোপন বোধোদয়।
[12/10, 9:43 PM] Munir Al Musanna.: এইদেশ
গরমের ছুটি মানে ছোটাছুটি টানে
মৌ মৌ আম, জাম মেতে যায় ঘ্রাণে
ভরে যায় বর্ষাতে আষাঢ় শ্রাবণ
মাঠ জুড়ে কৃষকের পড়ে থাকে মন।

বকুলের ঘ্রাণ পেয়ে ভেঙে গেলে ঘুম,
জেনে রেখো শরতের এলো যে মৌসুম!
সোনালী ধানের ক্ষেতে যদি বাজে শিষ
জেনে রেখো হেমন্তের পেয়েছে আশিস।

খেজুরের গুড় ঘ্রাণে যদি শীত আনে
পিঠাপুলি দূতিয়ালি করে যায় প্রাণে!
কচি পাতা ফুল পাখি যদি দেখি পাশে
ঝকঝকে নীলাকাশে ঋতুরাজ আসে!

এই দেশ জুড়ে নদী, কত রূপ তার
প্রতি পদে জনপদে কতো রঙের বাহার!
উদার জমিন ঘুরে পাহাড়ে সমতলে
দালাল খেদাও খুঁজে, ইতিহাস বলে।
[12/10, 9:46 PM] Munir Al Musanna.: ছিন্নমূল
ভাবখানা তার
এমন তরো,
ভীষণ ব‍্যাপার
এখন সরো!

ব‍্যস্ত তিনি
দেশ সেবাতে,
সবাই ঋণী
তাহার হাতে!

সে যদি সে
ভোট গেলে,
মরণ বিষে
পিষে ফেলে!

তবু সে যে
দেশপ্রেমিক
ঘষে মেজে
হচ্ছে ঠিক!

দুবেলা এই
বাজনা শুনি
কেবলা বাবাই
এখন গুণী!
[12/10, 9:47 PM] Munir Al Musanna.: সাদা কালো
সোজাসুজি
ফারাক বুঝি,
কোনটা সাদা কালো;

আরও বুঝি
পায়েস সুজি,
কেমন লাগে ভালো।

শুধুই অবুঝ
গুমের সূচ,
ফুটায় রাজনীতি!

ফুলে ফেঁপে
না কেঁপে,
হচ্ছে লোকে হাতি!

আর যে ঘরে
ভাঙে ঝড়ে,
ঠিকানাটা ও নাই!

চেয়ে দেখে
চেখে চেখে,
জাগবে কবে ভাই?

ভয় ভাঙাতে
চোখ রাঙাতে
পিঠ করে টানটান,

লক্ষ প্রাণে
ছড়িয়ে দেরে
বাংলাদেশের প্রাণ।
[12/10, 9:48 PM] Munir Al Musanna.: কাব্যে যখন দরপতন
কাব‍্যে যখন দরপতন, লাগবে কিসে লগ্ন?
বৃথা কিছু ভগ্ন মানুষ মুক্তি পেতেই মগ্ন!
ডুবতে থাকা মুক্তি সে বীর মিছিল নিয়ে ফিরে
ভগ্ন হৃদয় আশায় শুধু বুকটা জাগায় ধীরে।

ফুলে ফেঁপেই হচ্ছে দানব পাহাড় সম ধনে,
বৃথা অন্য স্বপ্ন দেখে দেশের জনগণে!
উল্লাসে যে মিছিলের স্বপ্নতে বুক নাচায়,
মায়ের গুমি পুত্র খুঁজি স্বৈরাচারীর খাঁচায়।

খুঁজবো কত, খুঁজবো কত? বিদ্রোহী হয় মন
আয়না ভাঙ্গি স্বৈরাচারের শক্ত পাটাতন।
মন উচাটন বুকের ক্ষতে ডুকরে কাঁদে যতো
মিছিল নিয়ে আয়না ভাঙ্গি দম্ভ শত শত!

সঞ্চারিত রক্তে যখন বইছে শতেক ঘৃণা
বিপ্লবে মন আটকানো মন কথা শুনবে কিনা?
ছন্দ ভেঙে শ্লোগান উঠুক মুক্ত স্বদেশ চাই
বাংলাদেশে বাংলাদেশী মূল্য থাকা চাই।
[12/10, 9:50 PM] Munir Al Musanna.: রুদ্ধ শ্বাসে
রুদ্ধ শ্বাসে
উর্ধশ্বাসে
ঘুরছে কারা
চারিপাশে?

নেই যে ঠিক
ঘোরার দিক
এই যে দেখো
কী ঝিকমিক!

কোন আশায়
মন ভাসায়
শরমে লোক
গুম খাঁচায়?

খোলস ছেড়ে
একটু দাঁড়া
তোর দেখাতে
জাগবে পাড়া।

ল‍্যাংড়া নুলো
জ‍্যান্ত খোড়া!
জাগুক ধীর
ঘুমন্তোরা।

নিজের বুকে
শক্তি যতো
পরখ করে
দেখনা কতো!
[12/10, 9:51 PM] Munir Al Musanna.: এমন করেই আগুন জ্বালো

বেশতো ভাল
লাগছে ভাল,
এমন করেই
আগুন জ্বালো।

আগুন জ্বালো
আগুন জ্বালো
নারাকাতুরে
পঙ্গপাল ও!

এমন করেই
উড়ছে ডানে,
ভীরু মানুষ
তার কী জানে?

তার কী জানে
কষ্ট কেমন!
নষ্ট কেমন
জ‍্যান্ত জীবন!

গড়তে জীবন
আর গড়াতে,
এই যে সমাজ
বদলাতে!

আগুন জ্বালো
আগুন জ্বালো,
নতুন শুরুর….
প্রদীপ জ্বালো।
[12/11, 9:59 PM] Munir Al Musanna.: বৃষ্টি যখন এলো

ছমছম করা গাঁয়ে
ঝমঝম পায়ে পায়ে
বৃষ্টি যখন এলো
ঝুমুর বৃষ্টি এলো,

খুব ধুমধাম করে
এক ঘুমনাম করে
ভিজতে কে গেলো?
লুকিয়ে কে গেলো?

খুঁজতে শেষে তারে
পাড়ার সকল দ্বারে
মায়ের বেলা শেষ,
শায়ান নিরুদ্দেশ!

একটু সময় পরে
ঘটাং ঘটাং করে
শব্দে আশে পাশে
কে আসে কে আসে?

কোন বাবুটা কে যে?
শায়ান কী সে যে?
শব্দে আসে পাশে
হিহি করে হাসে।