সময়ের দশে দশ– মুনীর আল মুসান্না

সময়ের দশে দশ–
আও*য়ামী লীগ এমন একটি দল (এটি রাজনৈতিক মাফিয়া গোষ্ঠী নাকি রাজনৈতিক ছদ্মাবরণে পার্শবর্তী দেশের এজেন্ট- এটি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে), ইতিহাসের ভয়ংকর এবং ভয়াবহতম গণ*হত্যা চালিয়ে দলটি একাত্তর পরবর্তী বিরোধী মত ও পথের মানুষকে গু*ম, খুন, আয়না*ঘরের নির্যাতন- নিষ্পেষণের ঐতিহাসিক সত্যতা প্রতিষ্ঠিত করেছে। ৩৬ জুলাই এর পর,
১০ মে ২০২৫, আও*য়ামী লীগের নি*ষিদ্ধে পথে জনদাবি প্রতিষ্ঠার অন্যরকম এক মাইলফলক। অন্যরকম জনআকাঙক্ষা প্রতিষ্ঠার দিন। দালালী ছেড়ে রাজপথের স্বীকৃতি আদায়ের রাজনৈতিক বিজয় অর্জনের দিন।
ফ্যা*সিষ্টের কফিনে ঠুকে দেওয়া এ পেরেক অন্যদিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সদাজাগ্রত কণ্ঠস্বর আগামী বাংলাদেশের পথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন আদালতের মাধ্যমে দল এবং এই খুনের সাথে জড়িত মাফিয়া চক্রের দ্রুত বিচারের জন্য যা যা দ্রুত করণীয়-
১) গঠিত ট্রাইবুনালের জন্য সর্বোচ্চ সাপোর্ট নিশ্চিত করে এ মাসের মধ্যে সাক্ষী শুরু করা এবং সাক্ষ্য একটানা প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চালাতে হবে। একমাস পর থেকে এটি একদিন পর একদিন সাক্ষ্য নেওয়া চালিয়ে যেতে হবে। এভাবে পরিকল্পিত মামলা চালাতে পারলে আগামী ৩৬ জুলাই এর মধ্যে শহীদ পরিবার এবং আহত জুলাই সৈনিকেরাসহ এদেশের মুক্তিকামী মানুষ বিচারের রায় পেতে পারবে।
২) আও*য়ামী লীগ দল ও ব্যক্তি পর্যায়ে আদালতের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি বিদেশে পাচারকৃত এবং অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দুদকের মাধ্যমে তদন্ত পূর্বক রাষ্ট্রের কোষাগারে নিতে হবে, জমি স্থাপনা,
ইন্ডাস্ট্রির মালিকানা রাষ্ট্রের দায়িত্বে দখল নিতে হবে।
৩) আও*য়ামী লীগ নিষিদ্ধের জন্য গণভোটের আয়োজনের মাধ্যমে এটি চিরতরে নি*ষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঐতিহাসিক দলিল তৈরি করতে হবে যাতে অন্য দলের জন্য ভবিষ্যতের নির্দেশিকা হতে পারে। পাশাপাশি গণহত্যার বিচারের মুখোমুখি করে দল হিসেবে আদালতের মাধ্যমে নি*ষিদ্ধ করতে হবে।
৪) প্রতিটি ক্যাডারের বেস্ট পারফর্মারদের প্রশাসনের কর্ম কর্তা হিসেবে পদায়ন করতে হবে। শুধুমাত্র প্রশাসন ক্যাডার থেকে টিএনও, ডিসি হওয়ার বিধানের কারণে বাংলাদেশের প্রশাসন ক্যাডারে ফ্যা*সিজম বাসা বেঁধেছে।এ বলয় ভাঙ্গা সময়ের অন্যতম দাবি।
৫) পুলিশ, প্রশাসন, এনএসআই, ডিজিএফআইয়ে কমপক্ষে একলক্ষ নতুন জনবল নিয়োগ দিতে হবে। গুম,খুন,আয়না*ঘর ও লুটপাটের সাথে জড়িত নৈতিকতা বিবর্জিত জনবল দিয়ে গতিশীল প্রশাসন আশা করা যায় না এবং র এর ছক চুরমার করার জন্য এ কাজ অবশ্যই সর্ব প্রথম করতে হবে।
৬) স্থানীয় সরকার নির্বাচন কাঠামো আমূল পরিবর্তন করতে হবে। একজন চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের কাছে পুরো জনপদ খাঁচায় বন্দী হওয়া ঠেকাতে হবে। অযোগ্য ও অশিক্ষিত লোক যেন কোনো প্রকারে নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারে তার বিধান দরকার। একব্যক্তি এক বারের বেশি মেম্বার, চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়র যেন না হতে পারে, তার বিধান থাকতে হবে। মিছিল/ গণসমাবেশ ও শক্তি প্রদর্শন মূলক প্রচারণা আইন করে বন্ধ করে নির্বাচনের খরচ কমাতে হবে এবং প্রচারণা একই সময়ে একই মঞ্চে সব প্রার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করতে হবে।
৭) সংবিধান বাতিল করে বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম বিশ্বাস ও মৌলিক মানবাধিকারের ভিত্তিতে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে। জাতীয় সংগীত অবশ্যই বাংলাদেশী ভূখণ্ডের কোনো কবির রচনা ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চেতনা ধারণ করতে হবে।
৮) শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্ম ও কারিগরি শিক্ষার মিশেলে যুগোপযোগী সংস্কার এবং দুদক, আয়কর, ভূমি অফিস, স্থল ও নৌবন্দরে ডিজিটাল সেবা ও ব্যাপক নজরদারির আওতায় আনতে হবে। সব সরকারি দপ্তরের ফি অনলাইন করতে হবে। অবৈধভাবে উপার্জনের সম্পদ দ্রুত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রের দায়িত্বে নেওয়ার বিধান করতে হবে। ঋণখেলাপীদের আইনের কঠোর খাঁচায় দ্রুত বন্দীর ব্যবস্থা করতে হবে।
৯) মাদকের বিরুদ্ধে কঠোরতম পদক্ষেপ নিতে হবে। মাদকের রুট ও সম্ভাব্য সরবরাহ ব্যবসায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি ও তদারকির আওতায় রাখতে হবে।
১০) টাকা পাচারকারীদের তালিকা, ব্যাংক লুটেরাদের তালিকা, অবৈধভাবে সম্পদশালী রাজনৈতিক নেতাদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি তার পরিবারের অন্য কেউ যেন সম্পদ ভোগ করতে না পারে, এবং ভোগকারীর শাস্তির বিধান করতে হবে। জেলায় জেলায় সাইনবোর্ডে এই লুটেরাদের ছবিসহ তালিকা টাঙানো এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পদ রাষ্ট্রের হেফাজতে নেওয়ার বিধি বিধান করতে হবে। দুদককে শক্তিশালী ও স্বাধীন করতে হবে।