শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
(বই পর্যালোচনা : গাজা উপত্যকার গল্প ) পরাবাস্তব জীবনের মোহে : মুনীর আল মুসান্না সময়ের দশে দশ– মুনীর আল মুসান্না ধামইরহাটে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশকে সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা তেরখাদা উপজেলা বিএনপির মতবিনিময় ও সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত ধামইরহাটে ওয়ার্ল্ড ভিশনের আয়োজনে শিশুদের জন্মদিন উদযাপন বসুন্ধরায় নারীচক্রের ভয়ংকর ফাঁদ — ১১ বছর ধরে পুরুষদের ব্ল্যাকমেইল! ঐতিহ্যবাহী শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির রবিউল হোসেন সভাপতি নির্বাচিত হাজারো নেতাকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত যুবদল নেতা পিন্টু এক্সিডেন্ট চলবেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক চার বা ছয় লেন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দাওয়াতি পক্ষ গণসংযোগে লোহাগাড়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ

(বই পর্যালোচনা : গাজা উপত্যকার গল্প ) পরাবাস্তব জীবনের মোহে : মুনীর আল মুসান্না

মুনীর আল মুসান্না, শিশু সাহিত্যিক ও ছোট গল্পকার , যশোর / ১০৯ টাইম ভিউ
আপডেট: রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

পরাবাস্তব জীবনের মোহে 
মুনীর আল মুসান্না
ছোট গল্পকার ও শিশু সাহিত্যিক

পরাবাস্তব জীবনের মোহে, ঐন্দ্রজালিক ধোয়াশার পাশ্চাত্য জীবন আমাদের এমনভাবে আকৃষ্ট করেছে যার টান বিচ্ছিন্ন করে আমরা ভাবতেই ভুলে গেছি যুদ্ধবহীন গাজা, জীবনের স্বাভাবিক কর্ম কোলাহল যেখানে অনুপস্থিত, সাহিত্য, শিল্প বোধের বিকাশ গাজাতে নীরবে
কিভাবে ঘটছে, তা এক বিস্ময়কর ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
শরণার্থী শিবিরে বেড়ে ওঠা জীবন কিভাবে গল্পের ছোঁয়া পায়? জীবন ধ্বংসকারী বোমারু বিমানের শব্দে যখন আতঙ্কে জীবন,শিল্প সাহিত্যের গল্প সেখানে একেবারে খুব বিস্ময়কর বটে!
আটটি গল্প ও কিছু অনুগল্প নিয়ে সাজানো গাজা উপত্যকার গল্প বইটি এনেছে ঐতিহ্য প্রকাশনা সংস্থা। শুভেচ্ছা মূল্য ২০০/ টাকা।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের প্রথম
বইমেলা ২০২৫, একটি লুটেরা দলের সমর্থকদের নানামুখী ষড়যন্ত্রের পরও বইমেলা চলেছে, কিন্তু বইমেলা নিয়ে অপপ্রচার বেশি থাকায় বইমেলা শতভাগ প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে পেতে সময় লেগেছে। এবং এই বইমেলায় আলোচনার তুঙ্গে যে কয়েকটি বই ছিল, এসবের মাঝে মহিউদ্দীন মোহাম্মদ এর “গাজা উপত্যকার গল্প” এবারের বই মেলায় বহুল প্রচার ও বিক্রি হওয়া তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। অভিনন্দন সময়ের সেরা অনুবাদক, প্রিয় মহিউদ্দীন মোহাম্মদ।
বিশ্ব সভ্যতার কেন্দ্র ভূমি ফিলিস্তিনের গাজাকে নরকের নগরীতে পরিনত করার জন্য ইসরায়েল এখন বিশ্ব খুনি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সারা দুনিয়ায়।
ইহুদিবাদী জল্লাদের নির্মম নির্যাতনের কসাই খানায় এই গাজায় যুদ্ধ দিনের রোজনামচায় যে আড়াল হয়ে হয়ে যাওয়া জীবনের গল্পগুলো একপ্রকার আগুনে শহরের দিনলিপি, যা আতেফ আবু সাইফের মনো ভাবনায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজার মানুষের বেঁচে থাকা সংগ্রামের নানামুখী চিত্র, আমাদের নরম হৃদয়ের চিন্তায় প্রবেশ করা অসম্ভব
এক অনুরণন, শুধু এক প্রশ্ন, এ কেমন জীবন? আহ! সারা বিশ্বের মানুষের মনে জাগে দরদী প্রতিবাদ। যা দেখি আমরা আতেফ আবু সাইফের সেই যে গল্পের সূচনায়- “নির্ঝঞ্ঝাট সকাল। রাস্তায় মানুষের গতিবিধি দেখে বোঝা যাচ্ছে কী যে খুশি! বিভীষিকাময় দশদিন পর অবশেষে তারা কয়েক ঘন্টার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেয়েছে। সবখানে এটাই একমাত্র খুশির খবর”।
এভাবে গল্প এ গিয়ে যায়।
যুদ্ধ আর কার্ফিউ এর মধ্যে বেঁচে মানুষের মনে আশা বাসা বাঁধে- “সামনের যুদ্ধবিরতিতে আবার দেখা হবে “। কী আশ্চর্য মানুষের ইচ্ছে। গা শিউরে ওঠে ভাবতে গেলে!
সভ্য সভ্যতায় মানুষ হয়ে এমন বাক্য আমাদের হজম করতে হয় এখনো!

ডায়েরির বর্ননার মত হেটে দেখা গাজার জমিন, গারিব আসকালানির অণুগল্প যেন যুদ্ধের মাঝে বলে যাওয়া,
হঠাৎ ধ্বংসের ছবি দেখে আতংকিত মনের বয়ান থেকে
শক্ত হয়ে আসা চোয়ালের কোনো ভাষা হয়ে ওঠে পুরো জনপদ।
” হঠাৎ কালো পালক বিশিষ্ট একটি কবুতর পড়ে গেল, মেয়েটির কান্না ঝরে নদী হয়ে গেল।”
তেরটি অনুগল্পের ভেতরে ঢুকে পড়ে যুদ্ধ! তারা সমুদ্রে বোমা বর্ষণ করেছে, আগপাছ, লোহিত কাক, উষ্ণতা, উদঘাটন, সাগরে, পিঠাপিঠি, উষ্ণ হৃদয়, দূরত্ব, পরনিন্দা, সাদা কবুতর, প্রেমিকের গোলাপ এবং শূন্যতা, এসব গল্পগুলোতে লুকিয়ে আছে যুদ্ধের ঘোর, যুদ্ধ দিনের বারুদ বারুদ গন্ধ গোলাপ! গন্ধ দেয়না, জীবন কেড়ে নেয় প্রেম, ভালবাসা, মায়ের বুক থেকে সন্তান, সন্তানের কাছ থেকে বাবা- মা,দাদা দাদি, মোড়ের দোকান থেকে শপিংমল, বাড়ি থেকে শহর, সবকিছু কেড়ে নেয় পৃথিবীর চোখে যারা অতি উন্নত তকমা পাওয়া কিন্তু মানবতার কাছে তারা এক ধেড়ে উল্লুক শয়তান ছাড়া বেশি কিছু নয়।
নাইরুঝ কারমুতের গল্প ” ব্রেকিং নিউজ… উম্মু আহমাদ”
একটি টেলিফোন সংলাপ শুনলে বোঝা যাবে গাজার মানুষের বেঁচে থাকা সংগ্রামের নানামুখী মনস্তাত্ত্বিক চাপ, যা তাদের জীবন স্বাভাবিক আচরণ এমন হয়েছে যে
আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য ব্যাপার মনে হয়। মনে হয় অন্য কোনো বিশ্বের গল্প এগুলো, যা শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ থাকে!
“ফোন বেজে ওঠে, উম্মু আহমাদ হাঁপাচ্ছেন,তার বোন ডাকছে: হ্যালো।
হ্যালো, তুমি ঠিক আছো?
আমরা ভালো আছি, তোমার সম্পর্কে আমাকে আশ্বস্ত করো।
আমাদের চারপাশে বোমা বিস্ফোরণ, উম্মু আহমাদ আর শিশুদের জন্য ভয় পাচ্ছি।
কিসের জন্য অপেক্ষা করছো? বাচ্চাদের নিয়ে আমাদের কাছে চলে আসো। আমাদের বাড়ি নিরাপদ। ”
বোমার শব্দের মাঝে নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার
তাড়নায় এই যে মায়া মায়া লেগে আছে, তা অতিক্রম করে দূরে যাওয়া জীবনের জন্য কত কঠিন!
নিজের মানুষের চিন্তার ভাঁজ কপালের ছিড়ে যাওয়া নাড়িরটান, সমাজ, বাতাসের ঝাপটায় যে ভালবাসা, তার মোহমায়া বেঁচে থাকা সংগ্রামের এক গভীর পাদটীকা
ছোট ছোট গল্পের, ঘটনার মধ্যে জীবন বেঁচে থাকতে চায়
আর দশটা দেশের মানুষের মত, নির্বিঘ্নে, বোমারু বিমানের ছায়ায় নয়।
মোনা আবু শারেখের বাকহীন গল্পে মানবিক বিশ্ব সত্যি বাকহীন হবে: গাজায় এক রাতের মাঝখানে মাত্র একটি ঘন্টা! আমি রকেট হামলায় মারা যাওয়ার ভয় পাওয়া বন্ধ করেছি; আমার এক বন্ধু আমাকে বলেছিল, তুমি রকেট শুনতে, দেখতে, বা অনুভব করোনা, যা তোমাকে হত্যা করে। কিন্তু গ্যাসের ব্যাপারটা ভিন্ন। তুমি তোমার কানে মৃত্যুর ফিসফিস করে কড়া কথা বলা শুনতে পাচ্ছো, তুমি শোনা ছাড়া কিছুই করতে পারবে না। ”
গাজাবাসীরা গল্পে আমরা জীবনের অনুষঙ্গ হিসেবে যতনা উপাদান পাই, তারচেয়ে ভয়, আতঙ্ক, বোমা, গ্যাস,
সাইরেন, হুইসিল, ব্রেকিং নিউজ হিসেবে যুদ্ধ বিরতি যেন পরম চাওয়ার বিষয়!
সমসাময়িক বিষয় নিরিখে গাজার গল্পগুলো আমাদের কাছে শেষমেশ জীবনের বার্তা দেয়, একচিলতে উঠোন, বাড়ি, মোড়ের দোকান, নিয়মিত শপিংমল, রেস্তোরাঁ, ঘুরে বেড়ানো শহরে আশ্বস্ত মানুষের মুখ, নিজস্ব সীমানা, দেশে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ানো জীবন হোক আর দশটা শহরের দিনলিপির মত সাজানো তকতকে,ঝকঝকে এবং হৈচৈ হুল্লোড়ে ভরপুর দিন। হিংসুটে দানব ইসরায়েলের কবল থেকে মুক্তির দিন,
আহা!
গাজাবাসী, গল্পের অনুসঙ্গ হোক যুদ্ধবিহীন। মহিউদ্দীন মোহাম্মদ এর হাত ধরে গাজা সহ আরবি সাহিত্যের নামকরা লেখকের লেখার প্রত্যাশা করছি আরো, আরো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

নওগাঁয় বাংলাদেশ প্রেসক্লাব জেলা শাখার উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত। মোঃ মোকছেদুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ। বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব নওগাঁ জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল ২৩ মার্চ ২০২৫, রবিবার বিকেল পাঁচটায় নওগাঁ সদর উপজেলা অডিটরুমে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইফতার ও দোয়া মাহফিলের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব নওগাঁ জেলা শাখার নবনির্বাচিত আহ্বায়ক কাজী নূরনবী নাইস। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার মোঃ আশিকুর রহমান ও বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নওগাঁ আহসানুল হক ভূইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি মোঃ আব্দুল হালিম মন্ডল। রাজশাহী বিভাগীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক জয় সাগর পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ হাসান ইমাম তালুকদার এবং রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হাফিজুর রহমান হাফিজ। এবং নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর এ আলম সিদ্দিকী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা ইউনিট কমান্ডার আফজাল হোসেন এবং বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের ৯ টি থানার কমিটির সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের গণমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে পরিচালনা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ আলমগীর হোসেন এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সদস্য সচিব মোঃ মোকসেদুল ইসলাম। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহসানুল হক ভূইয়া বলেন, রমজান মাস রহমতের মাস। এই সংগঠন যেন ভবিষ্যতে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে আরও এগিয়ে যায়, সেই প্রত্যাশা করি।” রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি মোঃ আব্দুল হালিম মন্ডল বলেন,বাংলাদেশ প্রেসক্লাব একটি সাংগঠনিক প্রেসক্লাব । সারা দেশে সুনামের সঙ্গে জেলা ও উপজেলায় গঠনটি পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করেন। এবং সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম তালুকদার বলেন, “বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সরকার কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনকৃত সাংবাদিক সংগঠন। এটি কোনো ব্যক্তিগত সংগঠন নয়। কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় বিভাগ এবং জেলার কার্যক্রম পরিচালিত হবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংগঠন এগিয়ে যাবে।” নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর এ আলম সিদ্দিকী বাংলাদেশ প্রেসক্লাব নওগাঁ জেলা শাখার জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে সবসময় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। দোয়া শেষে সকল অতিথি ও উপস্থিতিদের মাঝে ইফতার পরিবেশন করা হয়। এবং দোয়া ও ইফতারের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয

এক ক্লিকে বিভাগের খবর